সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন
করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট অভিযানের তথ্যঃ কোভিড-১৯ পরিস্থিতির প্রথম (১০ মার্চ) থেকে ৩১ আগস্ট, ২০২০ পর্যন্ত বরিশাল জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার নিয়ন্ত্রণ ও মাস্ক, স্যানিটাইজার মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিচালিত- মোট মোবাইল কোর্টঃ ৪৬৭ টি জরিমানাকৃত ব্যক্তির সংখ্যাঃ ৯৫২ জন জরিমানাকৃত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাঃ ৭৮৫ টি জরিমানার পরিমাণঃ ৫৭ লক্ষ ৪৪ হাজার ৪৮৫ টাকা কারাদন্ড দেওয়া হয়েছেঃ ১০২ জন ব্যক্তিকে (বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড) বিভিন্ন অভিযোগে সীলগালাকৃত প্রতিষ্ঠানঃ ১৫ টি
গত ২৪ ঘন্টায় মোবাইল কোর্ট ও জনসচেতনতা কার্যক্রমের তথ্যঃ
একনজরে গত ২৪ ঘন্টার মোবাইল কোর্ট অভিযানের তথ্য মোট মোবাইল কোর্টঃ ০৩ টি মোবাইল কোর্টসহ মোট সচেতনতা কার্যক্রমঃ ১১টি মোট মামলাঃ ১৭ টি মোট জরিমানাকৃত প্রতিষ্ঠানঃ ০২টি মোট জরিমানাকৃত ব্যক্তিঃ ০৮ জন মোট কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিঃ ০৭ জন সর্বমোট জরিমানা আদায়ঃ ৪৬০০/- টাকা
বরিশালে অনুমোদনহীনভাবে অদক্ষ লোকজন কর্তৃক বাসায় বাসায় গিয়ে হেপাটাইটিস বি টীকা বিক্রিঃ চার সহযোগীসহ মূল হোতা গ্রেপ্তার, গাঁজা সেবনের অপরাধে দুইজনকে তিন মাসের জেল এবং বাবুগঞ্জে মোবাইল কোর্টের অভিযানে ৪ হাজার ৬০০ টাকা অর্থদণ্ডঃ
বরিশাল মহানগরীর টিটিসি লেন, চৌমাথা এলাকায় আজ ৩১ জুলাই ২০২০ দুপুর ১২ঃ০০ টার দিকে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব এস, এম, অজিয়র রহমান এর নির্দেশনায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান এ অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানকালে দেখা যায় নগরীর টিটিসি লেন এ একটা বাসায় অফিস খুলে মোঃ আল আমিন ও তার চার সহযোগী বিভিন্ন বাসায় বাসায় গিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ মানুষকে হেপাটাইটিস বি টিকা দিয়েছেন, অথচ তারা কেউই মেডিকেল ব্যাকগ্রাউন্ডের না, তাদের নেই কোন অনুমোদন কিংবা লাইসেন্সও। টিকা দেওয়ার নিয়ম-কানুন সম্পর্কেও নেই তাদের কোন জ্ঞান, এ বিষয়ে বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মুন্সী মুবিনুল হক তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা টীকাদানের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে ভুল-ভাল উত্তর প্রদান করেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা জনৈক হাবিব নামক এক ব্যক্তি থেকে ৫০০০০ টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স কিনেন (যদিও তা দেখাতে পারেন নি), বাস্তবে এভাবে কোন ব্যক্তি থেকে লাইসেন্স কেনার কোন নিয়ম বা বিধান কিছুই নাই। এসময় আরো জানা যায়, এই চক্র প্রায় বছর খানেক ধরে মানুষের বাসায় গিয়ে গিয়ে মানু্ষকে নানা ভাবে বিভ্রান্ত করে টীকা নিয়ে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সার্বিক বিবেচনায় মেডিকেল এবং ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০-এর ২৮ ধারা মতে প্রতারণামূলক প্রতিনিধিত্ব করায় এবং ভূয়া নিবন্ধন দাবি করার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান এ চক্রের মূল হোতা মোঃ আল আমিন কে ৬ (ছয়) মাস ও তার চার সহযোগী সাব্বির হোসেন, ইমতিয়াজ আহমেদ, রিম্পা, সম্পাকে ১(এক) মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
অভিযানে প্রসিকিউশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জেলা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মুন্সী মুবিনুল হক এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেন বরিশাল গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম। অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান জানান, জনস্বার্থ এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জেলা প্রশাসন বরিশালের বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব অাতাউর রাব্বীর নেতৃত্বে বরিশাল মহানগরে অপর একটি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালিত হয়।
জানা যায়, সোমবার দুপুরের দিকে বরিশাল নগরীর নাজির মহল্লা এলাকায় দুইজনকে গাঁজা সেবনরত অবস্থায় হাতেনাতে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছে আরও বেশ কিছু অব্যবহৃত গাঁজাও পাওয়া গেছে বলে জানা যায়, যা পরবর্তীতে বিনষ্ট করা হয়।
পরবর্তীতে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য আইনের ৩৬ ধারা এর ১ সারণীর ২১ নং ক্রমিক অনুযায়ী ঐ ব্যক্তিদের মাদক সেবনের অপরাধে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। পাশাপাশি ৫০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৭ দিন বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। উক্ত অভিযানে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বরিশাল সহায়তা প্রদান করেন।
আজ বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের কলেজ গেইট এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ আমীনুল ইসলাম। মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালীন বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের কলেজ গেইট এলাকার কয়েকটি দোকানে সিগারেটের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করায় এবং নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রয় ও ব্যবহার করায় ২ দোকানিকে ধুমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ ও বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী ৩০০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে আদায় করা হয়।
এরপর করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারী চলাকালীন বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, নিয়মিত মাস্ক পরিধান করা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয়। এ সময় বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের মাস্ক পরিধান করতে অনুরোধ করা হয় এবং যারা মাস্ক ছাড়া যাতায়াত করছিল তাদের মাস্ক পরিধান করানো হয়। এ সময় সরকারি নির্দেশনা অমান্যকারী ৮ ব্যক্তিকে দণ্ডবিধি,১৮৬০ ও সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ অনুযায়ী ১৬০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে আদায় করা হয়।
মোবাইল কোর্টকে আইনানুগ সহযোগিতা করে বাবুগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জনাব আওলাদ হোসেনসহ পুলিশ ফোর্স। এ সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল কোর্ট শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ আমীনুল ইসলাম জানান যে, জনস্বার্থে মোবাইল কোর্টের এ অভিযান নিয়মিত অব্যাহত থাকবে। মোবাইল কোর্টের আইনানুগ কার্যক্রমে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
একইসাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের জন্য জেলার প্রতিটি মোড়ে মোড়ে এবং এলাকার গলিতে গলিতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। জনগণকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষায় জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব এস, এম, অজিয়র রহমান সদা সচেষ্ট এবং তাঁর নির্দেশনায় নিয়মিত জনস্বার্থে বরিশাল জেলা প্রশাসন কতৃক পরিচালিত এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।